Wellcome to National Portal
Main Comtent Skiped

Recent Activities

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রংপুর জেলার বিভিন্ন কার্যক্রম :

 

গভীর নলকুপ স্থাপনঃ

বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানি দ্বারা বছরব্যাপি সেচ সুবিধা চালু হওয়ায় এলাকার এক ফসলি জমি তিন ফসলি জমিতে রুপান্তরিত হয়েছে। এ ব্যবস্থায় অন্যান্য এলাকাতেও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে “বিএমডিএ” কর্তৃক পরিচালিত 699টি গভীর সেচযন্ত্র ও 08টি এল এল পি হতে সেচের মাধ্যমে প্র্রায় ………..লক্ষ মে. টন খাদ্য শস্য উৎপাদিত হচ্ছে।

 

সেচের জন্য ভূ-পরিস্থ নালা (Surface Drain) ব্যবহারের কারণে প্রচুর পানি অপচয় হয়। উপরন্ত কৃষি জমি নষ্ট হয়। পানির অপচয় রোধ ও কৃষি জমি সাশ্রয়ের লক্ষে ২০০০ সাল হতে সেচের জন্য নির্মিত ভূ-পরিস্থ সেচনালার পরিবর্তে ভূ-গর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহন করা হয়। এ ব্যবস্থায় প্রায় 567.63 কি: মি: ভূ-গর্ভস্থ পাইপ লাইন স্থাপনের কারণে ৩০ শতাংশ সেচের পানি সাশ্রয়সহ 35660 হেক্টর জমি কৃষি কাজের আওতায় আসায় প্রতি বছর অতিরিক্ত ……….. মে: টন খাদ্য শস্য উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।

 

সেচচার্জ আদায়ের জন্য প্রি-পেইড মিটার :

বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সেচের বিনিময়ে কৃষকদের নিকট থেকে অর্থ গ্রহণ করে। সেচচার্জ আদায়ের জন্য পূর্বে কুপন পদ্ধতি চালু ছিল। কুপন জাল, টাকা সংরক্ষণ, কৃষকদের আর্থিকভাবে প্রতারণা ইত্যাদি সমস্যার কারণে সেচের অর্থ আদায়ের জন্য ২০০৫ সাল হতে প্রি-পেইড মিটার কার্যক্রম চালু করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রতিটি গভীর নলকূপের পাম্পের সাথে একটি প্রি-পেইড মিটার সংযুক্ত থাকে। প্রত্যেক কৃষককে তার ছবি ও ব্যবহার নম্বর সম্বিলত একটি প্রি-পেইড ষ্মার্ট কার্ড সরবরাহ করা হয়। প্রত্যেক বিএমডিএ’র জেলা পর্যায়ের রিজিয়ন দপ্তর হতে সংশ্লিষ্ট উপজেলার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডিলার নিয়োগ করা হয়। ডিলারদের কাছে একটি ভেন্ডিং মেশিন থাকে। এতে ডিলারগণ প্রয়োজন অনুযায়ী বিএমডিএ উপজেলা পর্যায়ের জোন দপ্তর হতে অর্থ রির্চাজ করে।

 

একইভাবে কৃষকগণ তাদের কার্ডে ডিলারদের নিকট হতে প্রয়োজনমত অর্থ রিচার্জ করতে পারে। চার্জকৃত কার্ডটি গভীর নলকূপে সংযোজিত প্রি-পেইড মিটিারের নির্ধারিত স্থানে প্রবেশ করে সেচের পানি গ্রহণ করে। এ ব্যবস্থায় অর্থ আত্নসাতের কোন সুযোগ নেই। এ পদ্ধতিতে সেচের ব্যয় ও পানির অপচয় হ্রাস পেয়েছে এবং কৃষকদের আর্থিকভাবে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বন্ধ হয়েছে। “বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” বাংলাদেশে প্রথম প্রি-পেইড মিটার পদ্ধতিতে অর্থ আদায় কার্যক্রম শুরু করে।

  

গভীর নলকূপের মাধ্যমে খাবার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা :

বরেন্দ্র অঞ্চলে খাবার পানি অত্যন্ত দুস্প্রাপ্য। অনেক স্থানে হ্যান্ড টিউবওয়েল কার্যকর না হওয়ায় এলাকার জনগণ পূর্বে পুকুর, নদীনালা, খাল বিলের পানি পানে অভ্যস্ত ছিল। ফলে তারা পানি বাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতো। গভীর নলকূপ চালু হওয়ার পর জনগণ গভীর নলকূপ চলার সময় মাঠ থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে শুরু করে। পানীয় জলের এই সংকট নিরসনের জন্য ২৫ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ওভার হেড ট্যাংক নির্মাণ করে এবং এর সাথে পাইপের মাধ্যমে গভীর নলকূপের সঙ্গে সংযোগ দেয়া হয়। ওভার হেড ট্যাংক হতে পাইপ লাইন স্থাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে /নির্দিষ্ট স্থানে ফসেট/ ট্যাপের মাধ্যমে নিরাপদ পানীয়জল সরবরাহ করা হচ্ছে।

 

বিএমডিএ’র নিজস্ব পরীক্ষাগারে এসব পানি নিয়মিত পরীক্ষা করে এর নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। জনসাধারণ প্রি-পেইড কার্ডের মাধ্যমে এই পানি সংগ্রহ করে। গভীর নলকূপ হতে খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করায় প্রায় 10 হাজার মানুষ নিরাপদ খাবার পানি পান করে পানি বাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছে। এখন পর্যন্ত  রংপুর জেলায় 50টি এ ধরণের স্থাপনা তৈরী করা হয়েছে।

 

পানীয় জল এবং সীমিত আকারে সবজি চাষ এর জন্য পাতকুয়া নির্মাণ:

বাংলাদেশের মৃত্তিকা অঞ্চলগুলোর মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চল একটা বিশেষ মৃত্তিকা অঞ্চল। অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় এ অঞ্চলে ভূ-গর্ভের পানির স্তর মোটেই সমুদ্ধ নয়। ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর এতই অনুন্নত যে তা গভীর নলকূপ বা অগভীর নলকূপ দ্বারা পানি উত্তোলন সম্ভব হয় না, তবে এসব এলাকায় পাতকূয়া খনন করলে কুয়ায় পানি জমে। কুয়ায় জমা পানি উত্তোলন করে খাবার পানি ও গৃহস্থালিক কাজে ব্যবহারসহ কম সেচ লাগে এরূপ ফসল চাষ করা সম্ভব। সন্তোষজনক পানি পাওয়ার জন্য প্রায় 46 ইঞ্চি ব্যাসের 120 হতে 130 ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করা প্রয়োজন হয়। উক্ত এলাকায় আদিবাসী লোকজন এরুপ পাতকুয়া তৈরী করতে অসমর্থ হওয়ায় তারা খুব কষ্টে জীবন ধারণ করে এবং তাদের জমিতে কোন ফসল ফলাতে পারে না। বিষয়টি উপলব্ধি করে বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক মাননীয় কৃষি মন্ত্রী জনাবা মতিয়া চৌধুরী এম পি’র পরামর্শে “বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র এলাকায় পাতকুয়া খনন কার্যক্রম শুরু করে।

 

কুয়ার অনেক নীচে থেকে প্রচলিত পদ্ধতিতে দড়ি বালতি ব্যবহার করে পানি উত্তোলন করা বেশ কষ্ট সাধ্য। উক্ত অসুবিধা দুর করার জন্য সোলার প্যানেল ব্যবহার করে পানি উত্তোলন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সোলার প্যানেলগুলি প্রচলিত লম্বা সারিতে ব্যবহার না করে মাননীয় কৃষি মন্ত্রীর পরামর্শে কিছুটা ফানেল আকৃতি করে স্থাপন করা হয়, যাতে বৃষ্টির পানি জমে কুয়ায় পতিত হয়। এটা মাননীয় কৃষি মন্ত্রীর একটি বিশেষ উদ্ধাবন। পাতকুয়ার জমা হওয়া পানি সাবমারসিবল সোলার পাম্প ব্যবহার করে কুয়ার উপর স্থাপিত ট্যাংকীতে জমা করা হয়। পিভিসি পাইপ লাইনের মাধ্যমে পাতকুয়ার নিকট স্থাপিত ট্যাপ হতে জনসাধারন ট্যাংকীতে জমাকৃত পানি পান করা ও গৃহস্থালির কাজের জন্য সংগ্রহ করে এবং কম পানি লাগে এমন চাষযোগ্য জমিতে পাইপ লাইন নির্মাণ ও বিভিন্ন স্থানে ফসেট/আউটলেট স্থাপন করে ফসেট/আউটলেট থেকে সরাসরি ও ফিতা পাইপের মাধ্যমে সেচের পানি ব্যবহার করা হয়। “বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” রংপুর কর্তৃক খননকৃত 09টি পাতকুয়ার কার্যক্রম বর্তমানে সোলার পাম্পের সাহায্যে পরিচালনা করা হচ্ছে। উপকারভোগীগণ পাতকুয়ার পানি খাবার পানি হিসাবে পান ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করা ছাড়াও কম সেচ লাগে এমন ফসল যেমনঃ আলু, পটল, পিয়াজ, মরিচ, রসুন, পূইশাক, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, শসা, বেগুন, সিম, লাউ, ছোলা ও মসুর ইত্যাদি চাষ করে লাভবান হচ্ছে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষিত হচ্ছে এবং খুব সামান্য পানি লাগে এরূপ ফসল উৎপাদন করার ফলে পানির মিতব্যয়ী ব্যবহার হচ্ছে যা পরিবেশের কোন ক্ষতি করছে না।

 

ইতঃমধ্যে গত ৭ আগষ্ট ২০১৬ তারিখে “বরেন্দ্র এলাকায় পাতকুয়া খননের মাধ্যমে স্বল্প সেচের ফসল উৎপাদন” শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটির প্রধান উদ্যেশ্যঃ পাতকুয়া খননের মাধ্যমে সংরক্ষিত পানি দ্বারা স্বল্প সেচের ফসল উৎপাদন ও খাবার পানিসহ গৃহস্থালি কাজে পানি সরবরাহ। উক্ত প্রকল্পের আওতায় রংপুর জেলায় ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র এলাকা পীরগঞ্জ উপজেলায় ৩টি, মিঠাপুকুর উপজেলায় 4টি এবং বদরগঞ্জ উপজেলায় 02টি সহ মোট 9টি পাতকুয়া খনন করে 146 হেক্টর জমিতে স্বল্প সেচের ফসল উৎপাদনসহ 258 জন জনসাধারণকে খাবার ও গৃহস্থালির কাজে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।

 

বনায়ন ও কৃষিপণ্য বাজারজাত করণের জন্য গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন :

            পরিবেশ উন্নয়নের জন্য সড়কের উভয় পার্শ্বে বৃক্ষ রোপনসহ পুন:খননকৃত খাল ও পুকুর এবং বিভিন্ন খাস জমিতে নিয়মিত বৃক্ষরোপন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত রংপুর জেলায় 55821 টি বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে।

 

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাকা সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে আসছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে সুবিধা এবং গ্রামীণ জনগণের মান উন্নয়নে সহায়ক হয়েছে। পূর্বে দূর্গম অঞ্চলে সেখানে যাতায়াত করা দুরূহ ছিল সেসব অঞ্চলে গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বর্তমানে যাতয়াতের সুবিধার জন্য বিএমডিএ প্রত্যন্ত অঞ্জলে সংযোগ সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

 

সেচ কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমানোর জন্য ভূ-পরিস্থ পানি (Surface Water) ব্যবহার :

বরেন্দ্র এলাকার বৃষ্টিপাত দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় অনেক কম। সাম্প্রতিক সময়ে এর পরিমান আতো হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া বৃষ্টিপাত পূর্বের ন্যায় যথাসময়ে হচ্ছে না। সর্বোপরী সংস্কারের অভাবে নদী ও বিল গুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ায় কৃষিকাজ ক্রমান্বয়ে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এর ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য বিএমডিএ বর্তমানে সেচ কাজে ভূ-পরিস্থ পানি (Surface Water) ব্যবহারের উপর ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মোট 52.04 কি: মি: খাল পুন: খনন করা হয়েছে। বরেন্দ্র এলাকার ভূমি উঁচু-নিচু হওয়ায় পানি সংরক্ষণের জন্য পুন: খননকৃত খালে 2 টি ক্রসড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে।

  

নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপন :

ভূ-পরিস্থ পানি সংরক্ষণ করে সেচকাজসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করার জন্য ছোট ছোট নদীতে রাবারড্যাম স্থাপন জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের জন্য একটি কার্যকরী পদ্ধতি। বিএমডিএ ইতোমধ্যে রংপুর জেলার বিভিন্ন নদীতে রাবারড্যাম স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রকল্প প্রস্তুত পূর্বক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ব্যবস্থায় নদী সংলগ্ন খালে সেচ যন্ত্র স্থাপন করে জমিতে বছর ব্যাপী সেচের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।

 

জলবদ্ধতা দূরীকরণ :

বরেন্দ্র এলাকার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় জলাধারগুলো দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ভরাট হয়ে পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে বর্ষাকালে এসব এলাকয় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কৃষি কাজে অচল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে এবং শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ কৃষি উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য বিএমডিএ বড় বড় খাল পুন: খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে তারাগঞ্জ উপজেলায় 13.565 কি:মি: দৈর্ঘ্য, মিঠাপুকুর উপজেলায় 31.115 কি:মি: দৈর্ঘ্য এবং পীরগঞ্জ উপজেলায় 7.727 কিঃমিঃ খাল পুন: খনন করা হয়েছে। এ ব্যবস্থায় 1265 হেক্টর জমিতে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা দূর হয়ে আমন ধান চাষের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং খালে সংরক্ষিত পানি দ্বারা রবি মৌসুমে জমিতে সেচ প্রদানের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব খালের পাড়ে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নিয়মিতভাবে বৃক্ষরোপন করেছে।

 

শস্য বহুমুখীকরন:

বোরো ধান উৎপাদনে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। তাই সেচ কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমানোর জন্য বোরো ধানের পরিবর্তে শস্য বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে সেচের পানি কম ব্যবহার করে অধিক লাভজনক ফসল (গম, আলু, সরিষা ও ডাল জাতীয় ইত্যাদি) চাষের জন্য কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচী কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক গ্রহন যোগ্যতা পাওয়ায় বোরা ধান চাষ হ্রাস ও অন্যান্য ফসল ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেসব এলাকায় বোরো ধান চাষ হয় সেসব এলাকার কৃষকদেরকে সেচকাজে Alternate wetting and drying (AWD) পদ্ধতিতে সেচ প্রদানের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এ ব্যবস্থায় ২০ শতাংশ পানি সাশ্রয় হয়। বোরো ধান চাষ হ্রাস পাওয়ায় আউস ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উন্নত জাতের ধান বীজ ব্রি-ধান-৪৮ ও বি-ধান ৫৫ সরবরাহ ও এর উপর প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত আউশ ধানের বীজে হেক্টর প্রতি উৎপাদন ৩.৫০ টন এবং ব্রি-ধান-৪৮ ও ব্রি-ধান ৫৫ ধানের উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৫টন। উপরন্ত ব্রি-ধান ৪৮ খরা সহিঞ্চ।

 

 উন্নতমানের বীজ উৎপাদন ও সরবরাহ:

বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ সেচ প্রদানের পাশাপাশি গুনগত মানসম্পন্ন ও উচ্চফলনশীল বিভিন্ন জাতের ফসলের বীজ যেমন-ধান, গম, ছোলা, মাসকালাই, সরিষা ইত্যাদি উৎপাদন করে নায্যমূল্যে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করছে। বরেন্দ্র কর্তৃক উৎপাদিত বীজের গুনগতমান ভালো হওয়ায় কৃষকদের নিকট এর চাহিদা অত্যান্ত বেশী। তাই বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ উৎপাদিত কোন বীজ অবিক্রিত থাকে না।

 

বর্তমান সরকারের উদ্ভাবনী সংস্কৃতিতে পৃষ্ঠপোষকতার কারনে নাগরিক সেচ প্রদান ও গুনগত মানের পরিবর্তনঃ

 

ক) ই-সেচসেবাঃ সেচ চলাকালীন সময়ে সেচযন্ত্র নষ্ট হলে মেরামত কাজের জন্য কৃষকদের শ্রম ঘন্টার পাশাপাশি অর্থের অপচয় হয়। ই-সেচসেবা চালুর কারনে সেচযন্ত্র দ্রুত মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে কৃষকদের শ্রম ঘন্টার পাশিপাশি অর্থের অপচয়ও রোধ হচ্ছে। এছাড়াও ই-সেচসেবার মাধ্যমে কৃষকগণ সেচকৃত জমির মাটির আর্দ্রতা, আবহাওয়াসহ আনুসঙ্গিক ‍সুবিধা পাচ্ছে।

খ) মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে গভীর নলকুপের অপারেটরদের ভাতা প্রদানঃ বিএমডিএ’র গভীর নলকুপের অপারেটরদের ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে সময়মত ভাতা পেতেন না। এছাড়াও প্রত্যন্ত এলাকার অপারেটরদের হিসাবে প্রদেয় চেকের মাধ্যমে ভাতা প্রদান করার ফলে কালেকশনের জন্য ভোগান্তি পেতে হতো। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অপারেটরদের ভাতা প্রদানের ফলে অপারেটরগণ সহজেই ভাতা পাচ্ছে।

 

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ স্ব-অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। সেচচার্জ বাবদ আদায়কৃত অর্থ হতে এর যাবতীয় পরিচালনা ব্যয় নির্বাহ হয়। সরকারি অর্থায়নে যাবতীয় উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।